শিরোনাম :

ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে করোনায় মরে যাওয়া অনেক ভালো!!



সুনামগঞ্জ থেকে, গোবিন্দ দেব

সুনামগঞ্জ শহরের রিকশা চালান সোহেল মিয়া করোনাপরিস্থিতিতে যাত্রী না পাওয়ায় আয় রোজগার নেই তার মূলসড়কে উঠলে দু-একজন মেলে, তাতেও পুলিশের বাধা ফলেপরিবারকে ঠিক মতো তিন বেলা খাওয়াতে পারছেন না তিনি এরইমধ্যেতার ১০ মাসের ছেলের দুধ শেষ হয়ে গেছে টাকারজন্য দুধ কেনাও অনিশ্চিত হয়ে গেছে তার সোহেলমিয়া বলেন, ‘যাত্রী নাই, রোজগার নাই শুনলামলকডাউনের সময় আরও বাড়ানো হয়েছে নাখেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে করোনায় মরে যাওয়া অনেক ভালো আমার১০ মাসের ছেলের দুধ লাগবে যেকোনোমূল্য সেই দুধের টাকা রোজগার করতে হবে কিন্তুকীভাবে করব কিছুই জানি না শুধুসোহেল মিয়া নন শহরের এমন শত শত রিকশাচালকের চোখে আজ চাপা কান্না টাকারঅভাবে চালাতে পারছেন না সংসার এদিকেআরও এক সপ্তাহ লকডাউনের সময় বাড়ানোয় মাথায় হাত তাদের মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট, কালী বাড়ী পয়েন্ট, থানা পয়েন্ট, উকিল পাড়া পয়েন্ট, কাজীর পয়েন্ট, নবী নগর পয়েন্ট, হালুয়াঘাট পয়েন্ট, বক পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে রিকশার সিটের ওপর বসে আছেন চালকরা সরকারিবিধিনিষেধ অনুযায়ী বিনা প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে না পারায় তারা এখন পর্যন্ত কোনো টাকাই রোজগার করতে পারেননি পরিবাররসংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা রিকশাচালক রনি মিয়া বলেন, ‘করোনার মহামারির মধ্যে জীবিকা নির্বাহের জন্য শহরে রিকশা নিয়ে আসা লাগে কারণবাসা থেকে বের না হলে ছেলে মেয়েরা না খেয়ে থাকবে কীভাবেচাল ডাল কিনে বাসায় নিয়ে যাব সেটা নিয়ে সার্বক্ষণিক চিন্তায় থাকতে হয় পুলিশেরচোখ ফাঁকি দিয়ে যাই রোজগার করতে পারি তাই দিয়ে কোনোরকম সংসার টা চলছে রিকশাচালকমোজাফর মিয়া বলেন, ‘সকাল ৮টার সময় রিকশা নিয়ে বের হই কিন্তুবাসা থেকে বের হলেই পুলিশ রিকশার বসার সিট নিয়ে যায় অনেকসময় মারধর করে, চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয় এখনআমরা গরীব রিকশানা চালানে কীভাবে বাঁচব লকডাউনেনা খেয়ে থাকার চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো রিকশাচালকদিলু মিয়া বলেন, ‘আজকে অনেকদিন ছেলে মেয়েদের ভালো কিছু খেতে দিতে পারি না এখনপর্যন্ত শুধু ডাল আর ভাত কোনোরকমে মুখে তুলে দিচ্ছি আজকেবাসা থেকে বের হওয়ার সময় মেয়ে বলে দিয়েছে বাবা মাছ নিয়ে আসবা এখনপর্যন্ত রিকশা ভাড়া ৬০ টাকাই রোজগার করতে পারলাম না মাছ কি করে বাসায় নিয়ে যাব রিকশাচালকবাবুল বলেন, ‘যদি মাস্ক লাগিয়ে আমাদের দুজন যাত্রী নিয়ে শহরে পুলিশের হয়রানির মুক্ত রিকশা চালানোর অনুমতি দিত, তাহলে হয় তো আমরা গরীবরা বাঁচতে পারতাম

Commentbox

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Recents