হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের শংকরপুর গ্রামে পঞ্চায়েতি পুকুর থেকে মাটি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একই পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে শংকরপুর গ্রামের ফুটবল খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে।
আহতরা হলেন—দিপন সরকার, রাখাল সরকার, রাধামন সরকার ও দিলীপ সরকার। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
এ বিষয়ে আহত দিপন সরকার নবীগঞ্জ থানায় প্রদীপ সরকারের পুত্র প্রসেন সরকার (২৮), প্রশিক্ষণ সরকার (২৬), শুধাংশু সরকারের পুত্র সুভাস সরকার (৩৪), মৃত সুবোধ সরকারের পুত্র গৌরমন সরকার (৩৫), রতন সরকার, জগত সরকারের পুত্র সুধন সরকার (৩৫), নিবাস সরকারের পুত্র চন্ডী সরকার (৪৫) ও প্রদীপ সরকারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামে একটি পঞ্চায়েতি পুকুর রয়েছে। দিপন সরকার ও তার সহযোগীরা ওই পুকুর থেকে মাটি কেটে শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ মন্দিরের আঙিনা ও আশপাশে ভরাট করেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বলা হয় পুকুরের অবশিষ্ট মাটি বিক্রি করে সেই টাকায় শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে দেওয়ার জন্য।
সেই অনুযায়ী বিপলু চক্রবর্তী, রাধামন সরকার, নিপন সরকার, নারায়ন সরকার, সুমিত্রাস সরকার গং উক্ত পুকুর হতে ছোট ড্রেজার দ্বারা মাটি উত্তোলন করে মন্দিরের আঙ্গিনা ভরাট করার মুজুরীর টাকা নিতে চাইলে বিবাদীরা দিপন সরকারকে মাটি উত্তোলন করতে নিষেধ করে। বিষয়টি গ্রামের পঞ্চায়েতের লোকজনকে জানানো হলে তারা দিপন সরকার ও বিবাদীদের বিষয়টি মীমাংসা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন এবং পঞ্চায়েতের মুরুব্বি আবু সরকারের বাড়ীতে ২৫ এপ্রিল রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার সময় বৈঠকের দিন তারিখ নির্ধারন করা হয়।
ঘটনার পূর্বে দিপন সরকার ও তার ভাইয়েরা আবু সরকারের বাড়ীতে পঞ্চায়েতে সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য রওয়ানা করে। রাত সাড়ে আটটার সময় শংকরপুর গ্রামস্থ ফুটবল খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে খালি জায়গায় পৌছলে বিবাদী পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে দিপন সরকার ও তার পরিবারের চার জনের উপর হামলা করে গুরুতর আহত করে।
মামলার বাদী দিপন সরকার বলেন, আমাদের প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। প্রসেন সরকার তার হাতে থাকা পাইপ দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথার ডান পাশে আঘাত করে গুরুতর জখম করে, আমার মাথায় ৫টি সেলাই দেওয়া হয় এবং রতন সরকার লাঠি দিয়ে আমার ডান পিঠে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। অন্যদিকে বিবাদী রতন সরকার তার হাতে থাকা রুল দিয়ে আমার ডান হাতের কনুইয়ের উপরে ও কাধের পেছনে আঘাত করে।
বিবাদী গৌরমন সরকার তার হাতে থাকা পাইপ দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার ভাই রাখাল সরকারের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। আমার ভাই রাখাল সরকারের মাথায় ৭টি সেলাই দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণ সরকার তার হাতে থাকা রুল দিয়ে রাধামন সরকারের মাথায় এবং ডান হাতের কবজিতে আঘাত করে, রাধারমনের মাথাতেও ৬টি সেলাই দেওয়া হয়।
দিপন সরকার আরো বলেন- সুভাস সরকারের হাতে থাকা দা দিয়ে দিলিপ সরকারকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে। দিলিপের মাথাতেও ৮টি সেলাই দেওয়া হয়।
এসময় দিলিপ সরকার ডান হাত দিয়ে দা’এর কোপ ফেরাতে চাইলে দিলিপের কনিষ্ঠ আঙুল রক্তাক্ত জখম হয়।
পরে আমাদের সূর চিৎকার শুনে সাক্ষীগণ ও পাড়া প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি দুঃখজনক। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Commentbox